
রাজধানীর বনানী থা’নায় মা’দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মাম’লায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনির ফের এক দিনের রি’মান্ড মঞ্জুর করেছেন আ’দালত। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলামের আ’দালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
এদিন সকাল ৮টা ২৫ মিনিটের দিকে পরীমনিকে কাশিমপুর কারা'’গার থেকে প্রিজন ভ্যানে আ’দালত আনা হয়। তখন তাকে আ’দালতের গারদে রাখা হয়। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে এজলাসে তোলার পর তার উপস্থিতিতে শুনানি শুরু হয়।
এসময় আ’সামি পক্ষে তার আইনজীবী রি’মান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রা’'ষ্ট্রপক্ষ রি’মান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আ’দালত এই আদেশ দেন।
আদেশের পর সিএমএম আ’দালতের আট'’তলা ভবন থেকে পরীমনিকে বের করা হয়। আ’দালত ভবনের নীচে গারদ থা’নার সামনে শতশত মানুষ, সাংবাদিক পরীমনির জন্য অ’পেক্ষায় ভিড় করেন। এর ফলে হাঁটার মতো পরিস্থিতিও ছিল না।
এর মধ্যেই পরীমনিকে পু'লিশ কঠোর নিরাপ'’ত্তা দিয়ে গারদ থা’নায় নেয়ার জন্য রওনা দেয়। এসময় হুড়োহুড়িতে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন পরীমনি। এতে হাতে-পায়ে ব্যথা পান তিনি। পরে নারী পু'লিশরা তাকে তুলে গারদ থা’নায় প্রবেশ করান।
এর আগে, গত ১৬ আগস্ট পরীমনিকে ফের পাঁচ দিনের রি’মান্ডে নিতে আবেদন করে পু'লিশের অ’পরাধ তদ’ন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডির আবেদনে বলা হয়, দুই দিনের রি’মান্ডের জিজ্ঞাসাবাদের শেষ দিকে আ’সামি মাম’লার ঘটনা ও ঘটনার নেপথ্যে মূলহোতাদের বি’ষয়ে গু'’রুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে।
মাম’লার সুষ্ঠু তদ’ন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে আ’সামিরা প্রদত্ত তথ্য উপাত্ত যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় মাম’লাটি সুষ্ঠু তদ’ন্তের স্বার্থে আ’সামি শামসুন নাহার স্মৃ'’তি ওরফে পরীমনিকে ইতোপূর্বে আ’দালতের আদেশে পু'লিশ রি’মান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদে যে সকল তথ্য প্রদান করেছে উক্ত তথ্য সমূহের সঠিকতাসহ মা’দক ব্যবসায়ী মূলহোতাদের গ্রে'’ফতার,
মা’দকদ্রব্যের মজুদ উ’'দ্ধারসহ মা’দক ব্যবসার পিছনে অর্থের যোগানদাতাদের খুঁজে বের করতে পুনরায় তার ৫ দিনের পু'লিশ রি’মান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ একান্ত প্রয়োজন। আ’সামিকে রি’মান্ডে পাওয়া গেলে মা’দক ব্যবসায়ী মূলহোতাদের গ্রে'’ফতার, মা’দকদ্রব্যের অবৈধ উৎসসহ অ’পরাধলব্ধ আয়ের সন্ধান পাওয়া সম্ভব হবে।
গত ৪ আগস্ট সুনির্দি’'ষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অ’ভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আট'’ক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব'’)। অ’ভিযানে নতুন মা’দক এলএসডি, ম’দ ও আইস উ’'দ্ধার করা হয়। তার ড্রয়িংরুমের কাভার্ড, শোকেস, ডাইনিংরুম, বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বিপুল পরিমাণ ম’দের বোতল উ’'দ্ধার করা হয়।
এরপর রাত ৮টা ১০ মিনিটে পরীমনিকে তার বাসা থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে র্যাব'’ সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। ৮টা ৪৫ মিনিটে গাড়ি কুর্মিটোলায় র্যাব'’ সদর দফতরে পৌঁছায়। সেখানে রাত ১২টা পর্যন্ত পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব'’। পরদিন গত ৫ আগস্ট ‘'বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে র্যাব'’ সদরদফতর থেকে পরীমনি, রাজ ও তাদের দুই সহযোগীকে কালো একটি মাইক্রোবাসে করে নিয়ে বনানী থা’নায় রওনা দেয় র্যাব'’ের একটি টিম। এরপর র্যাব'’ বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থা’নায় পরীমনি ও তার সহযোগী বিপুর বিরু’'দ্ধে মা’দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মাম’লায় দায়ের করে।
মাম’লার পর রাত ৮ টা ২৪ মিনিটে পরীমনি ও তার সহযোগীকে আ’দালতে হাজির করা হয়। এরপর বনানী থা’নার মাম’লার তাদের চার দিন করে রি’মান্ড মঞ্জুর করেন আ’দালত। একইদিন ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদের আ’দালত মাম’লার এজাহার গ্রহণ করে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর তদ’ন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। এরপর সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ মাম’লায় গত ১০ আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুর দুইদিন করে রি’মান্ড মঞ্জুর করেন আ’দালত।
গত ১৩ আগস্ট দ্বিতীয় দফার রি’মান্ড শেষে পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুকে আ’দালতে হাজির করা হয়। এরপর মাম’লার তদ’ন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারা'’গারে আট'’ক রাখার আবেদন করে মাম’লার তদ’ন্ত কর্মক’র্তা সিআইডির পরিদর্শক গো’লাম মোস্তফা। এসময় আ’সামি পক্ষে তাদের আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রা’'ষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আ’দালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারা'’গারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মাম’লার সূত্রে জানা যায়, পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে মা’দক সেবন করতেন। এমনকি ভয়’'ঙ্কর মা’দক এলএসডি ও আইসও সেবন করতেন তিনি। এজন্য বাসায় একটি মিনি বার তৈরি করেন। তিনি বাসায় নিয়মিত ম’দের পার্টি করতেন। আর চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যাল’'কোহলসহ বিভিন্ন প্রকার মা’দকের সরবরাহ করত এবং পার্টিতে অংশ নিতো। পরীমনি ২০১৪ সালে সিনেমা জগতে আসেন। এপর্যন্ত ৩০টি সিনেমা ও ৫/৭টি টিভিসিতে অ’ভিনয় করেছেন। প্রযোজক রাজ তাকে পিরোজপুর থেকে ঢাকায় সিনেমা জগতে নিয়ে আসে।
ডেইলি বাংলাদেশ/টিআরএইচ