শ্রীপুরে শিশুর পা’য়ুপথ ও যৌ’নাঙ্গ ক্ষ’ত করে নির্যাতন

অ'ভিযুক্ত সৎ মা আলিফা আক্তার রিপা – ছবি : নয়া দিগন্ত

গাজীপুরের শ্রীপুরে সম্পত্তির লোভে এক প্রবাসীর আড়াই বছরের শিশু সন্তানের পায়ুপথ ও যৌ'নাঙ্গ ছিড়ে গভীর ক্ষত সৃ'ষ্টি করে নি'র্যা'তনের অ'ভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে শিশুটির সৎ মায়ের বিরু'দ্ধে শ্রীপুর থা'নায় শনিবার মাম'লা করেছেন ওই শিশুর দাদা আফাজ উদ্দিন।গু'রুতর আ'হত অবস্থায় শিশু মর'িয়ম আক্তারকে উ'দ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।শিশুর দাদা আফাজ উদ্দিন ও স্বজনরা জানান, ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থা'নার বাঁশিয়া গ্রামের আফাজ উদ্দিনের

ছেলে মোস্তফা কামাল গত ১৩ বছর যাব'ত দুবাইয়ে প্রবাস জীবন কা'টাচ্ছেন। প্রবাসের উপার্জিত অর্থ দিয়ে মোস্তফা কামাল গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা এলাকায় ১৪ শতক জমি কিনে পাঁচ তলা ভবন নির্মাণ করেন। আট' বছর আগে সাবিনা ইয়াছমিন নামে এক নারীকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন মোস্তফা কামাল। তাদের কোলে শিশুকন্যা মর'িয়ম আক্তারের জন্ম হয়। শিশুটি জন্মের পর দুবাই প্রবাসকালীন অ'ভিযুক্ত আলিফা আক্তার রিপার (৩০) সাথে মোস্তফা কামালের প'রকী'য়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রিপা মাগু'রা জেলার সদর উপজেলার ধনপাড়া গ্রামের রজব আলী বিশ্বা'সের মেয়ে। মোস্তফার সাথে সম্পর্কের একপর্যায়ে তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেন রিপা।

রিপাও বেশ কয়েক বছর দুবাই প্রবাসী ছিলেন। রিপা তাদের ওই সম্পর্ক পরিণয়ে রূপ দিতে প্রথম স্ত্রী সাবিনাকে ডিভোর্সসহ নানা শর্ত জুড়ে দেন। রিপার দেয়া সকল শর্ত মেনে নিয়ে প্রথম স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটান মোস্তফা। ওই সময় শিশু মর'িয়মের বয়স ছিল চার মাস। প্রথম স্ত্রীর সাথে বিয়ে বিচ্ছেদের পর প্রথম সংসারে জন্ম নেয়া শিশু মর'িয়মকে দেখাশোনা, মায়ের আদর ও ভালবাসা দেয়ার শর্তে আলিফা আক্তার রিপাকে বিয়ে করেন শিশুর বাবা মোস্তফা কামাল। গত ছয় মাস

আগে তার প্রথম সংসারের আড়াই বছরের শিশু সন্তানকে দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে রেখে আবার দুবাই চলে যান মোস্তফা।স্বজনরা জানান, দ্বিতীয় স্ত্রী আলিফা আক্তার রিপা হঠাৎ নারীঘটিত অ'সুস্থতার শি'কার হন। ওই অ'সুস্থতায় তিনি কোনো দিন মা 'হতে পারবেন না বলে চিকিৎসক নিশ্চিত করেন। এ খবরের পর থেকে মোস্তফা কামালের ভবনটি লিখে নিতে নানা কৌশল আঁটতে থাকেন আলিফা আক্তার। সম্পত্তির লোভে তিনি শিশুটির ওপর নি'র্যা'তন শুরু করেন। বুধবার এক ছেলেকে সাথে নিয়ে নাতি মর'িয়মকে

দেখতে শ্রীপুরের বাসায় যান আফাজ উদ্দিন। সেখানে গু'রুতর অ'সুস্থ অবস্থায় তার শিশু নাতিকে দেখতে পান। এ সময় শিশুটির পায়ু ও যৌ'নাঙ্গে গভীর ক্ষত দেখা যায়। ক্ষতগু'লোতে পঁচন ধরেছে। এ সময় মর'িয়মের অ'সুস্থতার কারণ জানতে চাইলে ভাতের গরম মাড়ের ওপর পা পিছলে পড়ে সে অ'সুস্থ হয়েছে বলে শিশুটির সৎ মা রিপা জানান। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় শিশুটিকে উ'দ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নেয়া হয়। অবস্থা গু'রুতর হওয়ায় সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: মইনুল আতিক এ ব্যাপারে বলেন, শিশুটির পায়ুপথ ছেড়া ও যৌ'নাঙ্গে দগদগে ঘাঁ রয়েছে। সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। পরে শিশুটিকে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

Interesting For You

ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুটির এ অবস্থার প্রকৃত কারণ জানা যেতে পারে।আফাজ উদ্দিন আরো বলেন, তার ছেলের দ্বিতীয় বউ (অ'ভিযুক্ত আলিফা আক্তার রিপা) বদ মেজাজি। ছেলে প্রবাসে যাওয়ার পর থেকে শিশু মর'িয়মকে নিয়ে রিপা এ বাসাতেই থাকেন। মোস্তফার একমাত্র উত্তরাধিকার শিশু সন্তান মর'িয়মকে তার স্বজনদের কাছে যেতে দিত না। মোস্তফার এ ভবনটি নিজ নামে লিখে নিতে রিপা নানা ষ'ড়যন্ত্র করে আসছিল। বেশ কয়েকবার শিশু মর'িয়মের ওপর তার সৎ মা রিপা নি'র্যা'তন

করে আসছিল। তার এ কাজ বন্ধ করতে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল। এরপরও পরিকল্পিতভাবে শিশুকে নি'র্যা'তন করে হ'ত্যার চে'ষ্টা করছিল সৎ মা আলিফা আক্তার।মোস্তফা কামালের ভবনটি দেখাশোনা করেন তারই মামা মন্নাছ শেখ।তিনি বলেন, হঠাৎ করেই দেখি চিকিৎসকদের কাছে শিশুটিকে নিয়ে সে দৌড়াদৌড়ি করছে। কাউকে

কিছু জানায়নি এমনকি জানতে চাইলে তিনি জানায় গরম পানিতে এমন হয়েছে। শিশুটিকে দাদা-দাদীসহ কারও কাছেই যেতে দিত না। হাসপাতালে যাতায়াতের সময় এক দিন শিশুটির এমন অবস্থা দেখে ফেলি। পরে শিশুটির দাদাকে ফোনে জানাই। আগু'নে পোড়ার ঘটনা হলে শিশুটি চিৎকার করত। ভবনের অন্য বাসি'ন্দারা জানতে পারত। এমন একটি ঘটনা অ'ভিযুক্ত সৎ মা আলিফা আক্তার কাউকে অনুমান করতেও দেয়নি।শিশুটির চাচা তারেক বাবু জানান, শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের

পরামর'্শে বৃহষ্পতিবার শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন শিশুটির অবস্থা খুব ক্রিটিক্যাল। পায়ুপথ ও যৌ'নাঙ্গের ক্ষত র'ক্তে ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসায় পজিটিভ এবং নেগেটিভ যে কোনো কিছুই 'হতে পারে। বেশ কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।হাসপাতালে শিশুটির সাথে দাদা আফাজ উদ্দিন ও দাদী রেহে'না খাতুনসহ সৎ মা আলিফা আক্তার রিপা রয়েছেন।অ'ভিযুক্ত আলিফা আক্তার সংবাদকর্মীদের সাথে এ ব্যাপারে কথা

বলতে রাজি হননি।শ্রীপুর থা'নার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, শিশু মর'িয়মকে নি'র্যা'তনের অ'ভিযোগে তার সৎ মায়ের বিরু'দ্ধে শ্রীপুর থা'নায় শনিবার মাম'লা করেছেন ওই শিশুর দাদা আফাজ উদ্দিন। মাম'লাটি তদ'ন্তাধীন রয়েছে। অ'ভিযুক্তকে গ্রে'ফতারের চে'ষ্টা চলছে।