আমাকে টানা এক ঘণ্টা পে’টায়

মর'িয়ম চম্পাঃ রামিসা তাবাস্‌সুম আলিনা। ম্যাপললিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থী। বয়স ১৯ বছর। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় সরকারি এক কর্মকর্তার ছেলে তানভীর কামাল তন্ময়ের সঙ্গে। পরবর্তীতে দু’জনের সম্মতিতে এবং পরিবারের উপস্থিতিতে বিয়ে করেন তারা।

বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই যৌ'’তুকের জন্য শুরু হয় অমান’'বিক নি’র্যাতন। এমনটিই অ'ভি’যোগ করেছেন ভুক্ত’ভোগী ওই শিক্ষার্থী। আলিনা রামিসা কথা বলতে গিয়ে কা’ন্নায় ভেঙে পড়েন।
বলেন, আমিতো সংসার করতে চাই। এর বেশি কিছু নয়। রামিসা বলেন, পরিচয়ের পাঁচমাস পরে চলতি বছরের মা'র্চ মাসে বিয়ে হয় আমা'দের।

বিয়ের কাবিন হয় ১২ই মা'র্চ এবং ৮ দিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে নেয় আমাকে। ঋ’ণ শো’ধের কথা বলে বিয়ের তৃতীয় দিনের মাথায় আমা'র ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা ৮ লাখ টাকা নিয়ে নেয় তন্ময়। তখন পর্যন্ত আমি বুঝতে পারিনি এটা যৌ'’তুক হিসেবে আমা'র কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে। এই শিক্ষার্থী বলেন, আমা'র বয়স যখন এক বছর তখন বাবা-মায়ের ডি’ভোর্স হয়ে যায়।

পরবর্তীতে মা দ্বিতীয় বিয়ে করে যুক্তরা'ষ্ট্র প্রবাসী হয়েছেন। বাবাও দ্বিতীয় বিয়ে করে রাজধানীতেই বসবাস করছেন। এরপর থেকে শ্যামলীতে নানুর বাসায় বড় হই।
চলতি বছর ও’লেভেল পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। এছাড়া একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরি করতেন তিনি। ওই শিক্ষার্থী বলেন, যেহেতু বাবা-মা ওভাবে নেই আমা'র তাই কর্মর'ত প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু টাকা লোন নেই বিয়ের খরচ মেটাতে।

বিয়ের এক স'প্ত াহের মাথায় প্রথম আমা'র গায়ে হাত তোলে তন্ময়। ওইদিন তন্ময় এবং তার মা আমা'র কক্ষে আসেন কথা বলতে। তারা জানায়, তন্ময় লন্ডনে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে যাব'েন। সব মিলিয়ে ৭০ লাখ টাকা লাগবে। তোমা'র নানার পরিবার যেহেতু বিত্তশালী সেখান থেকে টাকা'টা এনে দাও।’ টাকা আনতে পারবো না বলার পর তন্ময় এবং তার মা ওইদিন রাতে প্রথমবার আমা'র গায়ে হাত তোলেন।

Interesting For You

এরপর থেকে প্রতিনিয়ত আমাকে রুটিন করে পে’টানো 'হতো। এতো অ'ত্যা’চারের পরেও আমি তন্ময়কে ডি’ভোর্স দেইনি। চিন্তা করেছি, বাবা-মায়ের যেহেতু ডি’ভোর্স হয়েছে তাই কেউ যেন বলতে না পারে মেয়েও ডিভোর্সি। সর্বশেষ ১৭ই জুন আমাকে টানা এক ঘণ্টা পে’টানোর এক পর্যায়ে নাক দিয়ে প্রচণ্ড র’ক্তক্ষরণ হয়। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্প’র্শকাতর স্থানে সে আমাকে নি'র্যা'’তন করে।

ওইদিন রাতে প্রতিবেশী ভাড়াটিয়াদের ফোন পেয়ে পু'লিশ এলে তন্ময়ের খালাতো ভাই তাদের ফিরিয়ে দেয়। তাছাড়া আমিও পু'লিশকে জানাই, মাম’লা করবো না। আমি সংসার করতে চাই।
কিছুদিন মা’রধর থেকে বিরত থাকলেও এরপর আবার মুখসহ সারা শরীরে আঘা'ত করে। এ সময় আমি ফেসবুকে মেয়েদের একটি গ্রুপে পোস্ট লিখি- ‘আই নিড হেল্প’।

পরবর্তীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হই। এ সময় তন্ময় বাসা থেকে চলে যায়। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরি। রামিসা বলেন, আমা'র স্বামীর সঙ্গে আরও একাধিক নারীর বিবাহ-বহির্ভূ'ত সম্পর্ক ছিল। সব মেনে নিয়ে সংসার করতে চেয়েছি। পরবর্তীতে নি’র্যাতন সহ্য করতে না পেরে একাধিক আইনজীবীর দ্বারস্থ হয়েছি কারো সহযোগিতা পাইনি।

সংশ্লি'ষ্ট থা'নায় গেলেও কোনো আইনি সহায়তা পাইনি। বরং শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানাভাবে হু’ম’কি দিচ্ছে অনবরত। নি'র্যা'’তনের বি'ষয়ে জানতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর স্বামী এবং শ্বশুরকে একাধিকবার ফোন দিলেও সাড়া মেলেনি।

এ বি'ষয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পু'লিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শ’হীদুল্লাহ বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারী আ'দাবর থা'নায় একটি অ’ভিযোগ দিয়ে গেছেন এ পর্যন্তই জানি। তবে আমা'দের কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি। আমা'দের কাছে যারাই আইনি সহযোগিতা নিতে আসেন তাদের প্রত্যেককেই সহায়তা দেয়া হয়। এছাড়া নারী নি’র্যাতনের বি'ষয়গু'লো সবচেয়ে গু'রুত্ব দিয়ে আমর'া দেখি। তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। সুত্রঃ দৈনিক মানবজমিন