দুই হাকিমের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন হাইকোর্ট

চিত্রনায়িকা পরীমনিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রি'মান্ডে পাঠানোর ক্ষেত্রে ঢাকার মহানগর আ'দালতের দুই হাকিমের ব্যাখ্যায় সন্তু'ষ্ট নন উচ্চ আ'দালত।

বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ অ'সন্তোষ প্রকাশ করেন।

আ'দালত বলেছেন, দুই হাকিমের একজন তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মা'দকের ভ'য়াব'হতার কথা লিখেছেন। আর রি'মান্ড

মঞ্জুরের ক্ষেত্রে যে ত্রুটি হয়েছে, অন্য হকিম তা ‘বিশ্বা'সই করেন না’। পরে এ বি'ষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করেন আ'দালত।

বনানী থা'নায় মা'দকের মাম'লায় পরীমনিকে দ্বিতীয় দফায় দুইদিনের রি'মান্ডে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বা'স।

পরে একই মাম'লায় মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম তৃতীয় দফায় আরও এক দিনের রি'মান্ড মঞ্জুর করেন। কী কী তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে পরীমনিকে শেষ দুই দফা রি'মান্ড মঞ্জুর করা হয়েছিল, দুই হাকিমের কাছে সেই ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট। জামিন সংক্রা'ন্ত রুল ও রি'মান্ডের বৈধতা প্রশ্নে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারির এক আবেদনের শুনানিতে হাইকোর্টের এই বেঞ্চ ২ সেপ্টেম্বর এ আদেশ দেন। দুই হাকিমকে ১০ দিনের মধ্যে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

সে অনুযায়ী দুই মহানগর হাকিম তাদের লিখিত ব্যাখ্যা সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রারের দ'প্ত রে জমা দেন। সেই ব্যাখ্যা বুধবার হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হলে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম দাখিল করা ব্যাখ্যার অংশ পড়ে শোনান।

তিনি বলেন, ‘রি'মান্ড নিয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্টের যে গাইডলাইন এবং আমা'দের প্রচলিত আইন আছে, তারা এগু'লোর বিরু'দ্ধে। যে কারণে আমর'া তাদের জবাবে সন্তু'ষ্ট নই। এই মাম'লায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রি'মান্ড মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে আমর'া সন্তু'ষ্ট নই, যে কারণে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখ রাখলাম।’

Interesting For You

দুই মহানগর হাকিমের মধ্যে একজন পরীমনিকে রি'মান্ডে পাঠানোর সি'দ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে এলএসডি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের আ'ত্মহ'ত্যা এবং ওই মা'দকের ভ'য়াব'হতা তুলে ধরেন। সেটি পড়ে শুনিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন, ‘আমর'া তাকে শোকজ করেছি কেন তিনি রি'মান্ড মঞ্জুর করলেন। কিন্তু তিনি ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়ে কোন ছাত্র আ'ত্মহ'ত্যা করেছে তার বর্ণনা দিলেন।’

এরপর বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক অ’পর হাকিমের ব্যাখ্যা পড়ে শোনান। সেখানে ওই হাকিম বলেছেন, ‘উপরিউক্ত বি'ষয় সার্'বিক বিবেচনায় দুই দিনের রি'মান্ড মঞ্জুর করার আদেশের ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি নিতান্তই আমা'র ইচ্ছাকৃত নয়, সরলবিশ্বা'সে কৃত ভুল।’

এই ব্যাখ্যার বি'ষয়ে বিচারপতি বলেন, ‘এখানে যে ত্রুটি হয়েছে তা তিনি বিশ্বা'সই করেন না। হাইকোর্টকে আন্ডারমাইন করা হয়েছে।’

৪ আগস্ট ঢাকার বনানীর বাসায় অ'ভিযান চালিয়ে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে গ্রে'ফতার করে র‌্যাব'। পরদিন তার বিরু'দ্ধে বনানী থা'নায় মা'দক আইনে মাম'লা করা হয়। প্রায় এক মাস পর জামিনে মুক্তি পান তিনি। এ মাম'লায় তিন দফায় টানা সাত দিনের রি'মান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পু'লিশ। ৫ আগস্ট প্রথম দফায় চার দিন, ১০ আগস্ট দুই দিন এবং ১৯ আগস্ট একদিনের রি'মান্ডে পাঠনো হয় পরীমনিকে।

বারবার রি'মান্ডের বৈধতা প্রশ্নে স্বতঃস্ফূর্ত রুল চেয়ে ২৯ আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করে মানবাধিকার ও আইনি সহায়তাকারী সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। তা আ'দালতে উপস্থাপন করা হলে ১ সেপ্টেম্বর বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন, “তৃতীয় দফায় পরীমনির রি'মান্ড মঞ্জুর করে ম্যাজিস্ট্রেট ‘রি'মান্ড ক্ষ'মতার অ’প্যবহার’ করেছেন। ‘তাদের সামনে কী ম্যাটেরিয়াল (তথ্য-উপাত্ত) ছিল যে তদ'ন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনে রি'মান্ড মঞ্জুর করলেন? এগু'লো কোনো সভ্য সমাজে 'হতে পারে না।”

পরদিন অ্যাটর্নি জেনারেলের উপস্থিতিতে শুনানি করে আ'দালত আদেশ দেন। পরীমনির বিরু'দ্ধে বনানী থা'নার মা'দক মাম'লার তদ'ন্ত কর্মকর্তাকে তলব করার পাশাপাশি শেষ দুই দফায় রি'মান্ড মঞ্জুর করা দুই হাকিমের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়। হাইকোর্ট সেদিন বলেছিলেন, ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে এ দুই হাকিমকে তলব করা 'হতে পারে।

আসকের (আইন ও সালিশ কেন্দ্র) পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, মুজিবুর রহমান, ড. সৈয়দা নাসরিন ও অ্যাডভোকেট মো. শাহীনুজ্জামান। রা'ষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবু ইয়াহহিয়া দুলাল ও সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।