আল্লাহর সঙ্গে জান্নাতিদের সাক্ষাৎ কেমন হবে, আল্লাহকে কি দেখা যাবে

আতাউর রহমান খসরু : পৃথিবীতে মুমিন মহান আল্লাহকে না দেখেই তার প্রতি বিশ্বা'স স্থাপন করে, তাঁর আদেশ-নিষে'ধ মান্য করে। বিনিময়ে পরকালে তারা আল্লাহর কাছে বিনিময় প্র'ত্যাশা করে। পরকালে মুমিনের বিশ্বা'স ও আনুগত্যের যেসব পুরস্কার দান করবেন, তার ভেতর সর্বোত্তম পুরস্কার হলো মহামহিম আল্লাহর সাক্ষাৎ ও দর্শন। জান্নাতে মুমিনরা আল্লাহকে দেখে তাদের মনোবাসনা পূরণ করবে এবং সর্বোচ্চ পরিতৃ'প্ত ি লাভ করবে। বিপরীতে অবিশ্বা'সীরা আল্লাহর সাক্ষাৎ থেকে বঞ্চিত হবে।

আল্লাহকে দেখা কি সম্ভব?
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা ও বিশ্বা'স হলো, পার্থিব জীবনে মানুষের পক্ষে আল্লাহর সাক্ষাৎ বা তাঁর দেখা পাওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য মুসা (আ.) যখন ‘হে প্রতিপালক, আমাকে দেখা দিন’ বলে সাক্ষাতের আবেদন করেছিলেন, তখন উত্তর দেওয়া হয়েছিল : ‘তুমি কখনোই আমাকে দেখতে পারবে না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১৪৩)

তবে পরকালে মুমিনরা আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করবেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘কেয়ামতের দিন বহু মুখমণ্ডল সজীব ও প্রফুল্ল হবে। তারা নিজ পালনকর্তাকে দেখতে থাকবে।’ (সুরা কিয়ামা, আয়াত : ২২-২৩)

v
আল্লাহর সাক্ষাৎ হবে সবচেয়ে প্রিয়
পরকালে মুমিনের কাছে আল্লাহর সাক্ষাৎ হবে সবচেয়ে প্রিয় বি'ষয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন জান্নাতবাসীরা জান্নাতে প্রবেশ করবে তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, তোমর'া কি এমন কিছু চাও, যা আমি বাড়িয়ে দেব? তারা বলবে, আপনি কি আমা'দের চেহারা উজ্জ্বল করেননি? আপনি কি আমা'দের জান্নাত দান করেননি? আপনি কি আমা'দের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেননি? অতঃপর আল্লাহ তাঁর পর্দাগু'লো সরিয়ে দেবেন। জান্নাতিদের আল্লাহর সাক্ষাতের চেয়ে বেশি প্রিয় কিছু দান করা হবে না।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৩৮)

যেমন হবে মহামহিমের সাক্ষাৎ
জান্নাতে মুমিনরা যখন আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করবে সে সময়ের দৃশ্য হাদিসে খুব সামান্যই বিবৃত হয়েছে। যার কয়েকটি হলো, আল্লাহকে দেখা যাব'ে নির্বিঘ্নে : জারির ইবনু আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বলেন, একবার পূর্ণিমা'র রাতে নবী (সা.) আমা'দের কাছে বের হয়ে এলেন। অতঃপর তিনি বললেন, ‘শিগগিরই তোমর'া তোমা'দের প্রতিপালককে কিয়ামতের দিন দেখতে পাবে, যেমন এ চাঁদটিকে তোমর'া দেখছ এবং একে দেখতে তোমা'দের অ'সুবিধে হচ্ছে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৪৩৬)

আল্লাহ কথা বলবেন : আদি ইবনু হাতিম (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমা'দের প্রত্যেকের সঙ্গে শিগগিরই তার প্রতিপালক কথা বলবেন, তখন প্রতিপালক ও তার মধ্যে কোনো অনুবাদক ও আড়াল করে এমন পর্দা থাকবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৪৪৩)

আদন জান্নাতে সাক্ষাৎ হবে : কায়স (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘দুটি জান্নাত এমন হবে, সেগু'লোর পানপাত্র ও তার ভেতরের সব কিছুই হবে রুপার। আর দুটি জান্নাত এমন হবে, সেগু'লোর পানপাত্র ও তার ভেতরের সব কিছুই হবে সোনার। জান্নাতে আদনে তাদের ও তাদের রব্বের দর্শনের মধ্যে তাঁর চেহারার ওপর অহংকারের চাদর ছাড়া আর কোনো কিছু আড়াল থাকবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৪৪৪)

Interesting For You

জান্নাতিরা কৃতজ্ঞতায় সেজদা করবে : আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘(সব ধরনের নেয়ামত লাভের পর) জান্নাতিরা বলবে, আমা'দের প্রভুর মুখদর্শন ছাড়া আর কিছুই অবশি'ষ্ট নেই, তখন আল্লাহ তাদের সামনে আ'ত্মপ্রকাশ করবেন এবং জান্নাতিরা সেজদায় পড়ে যাব'ে। তাদের বলা হবে, তোমর'া আমল করার স্থানে নেই, তোমর'া রয়েছ প্রতিদান লাভের স্থানে।’ (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম : ২/৮৮৭)

আল্লাহ কোরআন তেলাওয়াত করবেন : বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই জান্নাতিরা প্রতিদিন দুবার মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর কাছে প্রবেশ করবে। অতঃপর তিনি তাদের সামনে কোরআন তেলাওয়াত করবেন।’ (জামিউস সগির, হাদিস : ২২৩৪)

পাপীরা আল্লাহকে যেমন দেখবে
পরকালে পাপীরাও আল্লাহর সাক্ষাৎ পাবে, তবে তারা আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহের চেহারা দেখবে না। তাদের প্রতি আল্লাহ থাকবেন ক্রোধান্বিত। আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথ করে কোনো মুসলিমের সম্পদ আ'ত্মসাৎ করবে, সে কেয়ামতের দিন আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হবে এমন অবস্থায় যে তিনি তার ওপর রাগান্বিত।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৪৪৫)

আল্লাহর দেখা পাবে না অবিশ্বা'সীরা
অবিশ্বা'সীরা সেদিনও শা'স্তি হিসেবে আল্লাহর সাক্ষাৎ থেকে বঞ্চিত হবে। আল্লাহ বলেন, ‘অবিশ্বা'সীরা সেদিন নিজ পালনকর্তার সাক্ষাৎ থেকে আড়ালে থাকবে (বঞ্চিত হবে)।’ (সুরা মুতাফফিফিন, আয়াত : ১৫)

আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই অবিশ্বা'সীরা আল্লাহকে আপন অবস্থায় দেখবে না, তিনি তাদের সামনে আ'ত্মপ্রকাশ করবেন না, আবার তিনি তাদের থেকে গোপ'নও থাকবেন না।’ (মাজমুআতুল ফাতাওয়া : ৬/২৯২)

আল্লাহর সাক্ষাৎ প্র'ত্যাশা করতে হবে
ুনিঃসন্দে'হে আল্লাহর সাক্ষাৎ বান্দার জন্য সর্বোত্তম পুরস্কার। এ পুরস্কার মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা ক