
বিশালাকার সব গাছ। আর এসব গাছের ডালপালায় ঝুলছে রং-বেরঙের জুতা। অবাক করা এক কাণ্ড। গাছে ঝুলছে হাজারও রকমের স্যান্ডেল, স্লিপার, হাই হিল, স্কেট সু।
গাছে আবার কেউ জুতা বেঁধে রাখে না কি? সবচেয়ে অবাক করা বি'ষয় হলো, এই জুতার গাছ শুধু বিশ্বের একটি স্থানে নয় বরং কয়েকশ স্থানে আছে। তবে কীভাবে গাছে জুতা বাঁধার রীতি চালু হলো?
আসলে যে কেউ তার কোনো অর্জন, জয়, পরাজয় কিংবা দুঃখ, 'হতাশা ই'ত্যাদি স্মর'ণীয় করে রাখতেই গাছে জুতা ঝুলিয়ে রাখেন। ঠিক কবে থেকে এর উৎপত্তি শুরু হয়েছে তার সঠিক কোনো ইয়ত্তা নেই। ধারণা করা হয়, অন্তত ১০০ বছরের পুরোনো এক রীতি এটি।
তবে ধারণা করা হয়, এর উৎপত্তি ঘটে উত্তর আমেরিকায়। এরপর ইংল্যান্ড ও পরবর্তীতে পুরো ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। ইতিহাসবিদদের মতে, সেনাবাহিনী কর্তৃক এই রীতির উদ্ভব ঘটেছিল।
যখন সৈন্যরা চাকরি ছেড়ে চলে যেতেন তখন নিজেদের বুটগু'লো নির্দি'ষ্ট একটি জায়গায় ফেলে দিতেন। পরবর্তীতে সেগু'লো যাতে অন্যরা পরতে পারেন এজন্য গাছে ঝুলিয়ে রাখা 'হতো।
কিছু কুসংস্কারও আছে এই বি'ষয়ক, যেমন- দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ব্যক্তিরা যদি গাছে জুতা বাঁধেন তাহলে মানসিকভাবে তারা সুস্থ থাকবেন। আবার ইংল্যান্ড ও ইউরোপে কেউ মা'রা গেলে পরিবারের সদস্যরা এক জোড়া জুতা গাছে ঝুলিয়ে রেখে মৃ'ত ব্যক্তির আ'ত্মা'র তু'ষ্টি কামনা করেন।
আবার অনেকেই বলেন, মানসিকভাবে যারা বিপর্যস্ত তারাই এ ধরনের কাজ করেন। মাতাল হলেই লোকে এমন কাজ করতে পারে। তবে ভার্জিনিয়ার ব্রুস সারসিন জানান বিশেষ একটি গাছের কথা।
টরেন্টো থেকে ৯০ কিলোমিটার উত্তরে দক্ষিণ বেভারটনের লেক রিজ রোডের জুতা গাছটির একটি বিশেষ অর্থ বহন করে। তিনি বলেন, ‘আমা'র বড় ভাই জর্জ ১৯৯০ সালে এই গাছটিতে তার এক জোড়া জুতা ঝুলিয়ে রাখেন। তিনি আসলে অ'সহায়দের সাহায্য করতে চেয়েছিলেন।’
১৯৯১ সালে ছেলে হওয়ার আনন্দে নতুন এক জোড়া জুতা ওই গাছে ঝুলিয়ে আসেন সারসিন। তিনি জানান, ‘পরবর্তীতে যখন কন্যা সন্তান জন্মেছে তার জন্য গাছে আরেক জোড়া জুতা ঝুলিয়ে আসি।’ এরপর থেকে অনেকেই নবজাতক জন্মের পর এই গাছে জুতা ঝুলিয়ে স্মর'ণীয় করে রাখে। বর্তমানে ওই গাছটি জুতায় পরিপূর্ণ। এমন গাছের জুতা আরও আছে হাওয়াই, অ'স্ট্রেলিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, সাউথ আফ্রিকা, চীন, রাশিয়া, মধ্য প্রদেশসহ বিশ্বজুড়েই।
সবগু'লো জুতা গাছের পিছনেই আছে অদ্ভুত ও লো'মহ'র্ষক ঘটনা। আমেরিকার ইদাহো রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের একটি বনে এমনই এক জুতার গাছ ছিল। ৬০ বছর পর গাছটি ২০১০ সালে রহস্যজনকভাবে আগু'নে পু'ড়ে যায়। মিশিগানের সালেমে এমনই একটি জুতার গাছ ছিল। স্থানীয়দের মতে, এক সিরিয়াল কিলার মৃ'তদের জুতা গাছটিতে ঝুলিয়ে রাখতেন। একেকটি জুতার গাছ নিয়ে আছে অদ্ভূ'ত সব রহস্য।