
অবশেষে ভোটার তালিকায় জীবিত হলেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের আছিয়া খাতুন, যাকে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় মৃ'ত দেখানো হয়েছিল।
একজন মান'বিক মানুষের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আবেদন থেকে শুরু করে মৃ'ত থেকে জীবিত হওয়ার পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে তার। এমনকি এরই মধ্যে বয়স্ক ভাতার জন্যও আবেদন করেছেন তিনি।
আছিয়া খাতুন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গড় মাছুয়া নামাপাড়া গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের স্ত্রী। জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী তার বয়স ৭৩ বছরেরও কিছু বেশি।
সমাজসেবা অধিদ'প্ত রের নিয়ম অনুযায়ী নারীদের ক্ষেত্রে বয়স্কভাতা পেতে হলে ৬২ বছর হলেই চলে। কিন্তু বেঁচে থাকলেও ভোটার তালিকায় তাকে মৃ'ত দেখানো হয়েছিল। ফলে বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে পারছিলেন না তিনি।
এমনকি গু'রুতর এ ভুল সংশোধনে কি করবেন, সেটিও ভেবে পাচ্ছিল না ভুক্তভোগী পরিবারটি। এ নিয়ে গত ২২ আগস্ট সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি দেখে বৃ'দ্ধা আছিয়া খাতুনকে সহযোগিতা করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন আসমা চৌধুরী নামে জেলা শহরের বাসি'ন্দা একজন মান'বিক মানুষ। তিনি সদরের সতাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মর'ত রয়েছেন।
সংবাদ প্রকাশের পর আছিয়া খাতুনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আসমা চৌধুরী। এরপর থেকে শুরু হয় তার দৌড়ঝাঁপ। আছিয়া খাতুনকে নির্বাচন অফিসে আনা থেকে শুরু করে আবেদন করানো সবই অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে সম্পন্ন করান তিনি। কেবল আবেদন করিয়েই দায়িত্ব শেষ না করে সংশ্লি'ষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের মাধ্যমে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সংশোধনের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় আছিয়া খাতুনকে জীবিত হিসেবে লিপিব'দ্ধ করাতে সক্ষ'ম হন আসমা চৌধুরী।
গত ৫ সেপ্টেম্বর 'বিকেলে জীবিত হওয়ার খবরটি আসমা চৌধুরী যখন প্রথম আছিয়া খাতুনকে জানান, আছিয়া খাতুন তখন আনন্দে কেঁদে ফেলেন। আছিয়া খাতুনের ছেলে আবদুস সালাম বলেন, এমন সুখের দিন আমা'র মায়ের জীবনে আর আসেনি। ভোটার তালিকা সংশোধন নয়, যেন তিনি নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন।
এদিকে ভোটার তালিকায় জীবিত হিসেবে সংশোধনের পর বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করেছেন আছিয়া খাতুন। এক্ষেত্রেও যথাসাধ্য সহযোগিতা করেছেন আসমা চৌধুরী।
এ ব্যাপারে আসমা চৌধুরী বলেন, একজন অ'সহায় মা বিপদগ্রস্ত অবস্থায় পড়েছেন জেনে ভীষণ খারাপ লেগেছিলো। তার পাশে দাঁড়াতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।
এরই মধ্যে মৃ'ত দেখানো ওই মাকে ভোটার তালিকায় জীবিত দেখিয়ে তথ্য সংশোধন করা হয়েছে। তিনি আগের আইডি কার্ডেই এখন সরকারি সকল সেবা নিতে পারবেন। এছাড়া তার বয়স্ক ভাতার জন্যও অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি, তিনি বয়স্ক ভাতা পাবেন।
আসমা চৌধুরী নির্বাচন অফিস সংশ্লি'ষ্টদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
ডেইলি বাংলাদেশ/