
লকডাউনে খাবারের অভাবে সড়কের পাশে বসে ক্ষুধায় কাঁদছিলেন সম'লা বেগম (৮০) নামে এক বৃ'দ্ধা। পরে খাদ্যসামগ্রী কিনে দিয়ে রিকশায় করে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন শেরপুরের ঝিনাইগাতীর ইউএনও ফারুক আল মাসুদ।
শনিবার দুুপুরে ঝিনাইগাতী-শেরপুর সড়কের খৈলকুড়া এলাকার সড়কের পাশে বসে কাঁদছিলেন স্বামীহারা ওই বৃ'দ্ধা। সম'লা বেগম উপজেলার খৈলকুড়া গ্রামের মৃ'ত. সোবহানের স্ত্রী।
সূত্র জানায়, শনিবার ঝিনাইগাতীর হাতিবান্দা ইউপির করোনা প্রতিরোধের গণটিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন করে ফিরছিলেন ইউএনও ফারুক আল মাসুদ। এ সময় সড়কের পাশে বসে ক্রন্দনরত অবস্থায় এক বৃ'দ্ধাকে দেখতে পান। এর পরপরই চালককে বলেন গাড়ি থামাতে।
পরে গাড়ি থেকে নেমে বৃ'দ্ধার কাছে গিয়ে কেন কাঁদছেন জানতে চান ইউএনও। পরে বৃ'দ্ধা সম'লা বেগম দু’চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, ঘরে খাবার নাই। খুব ক'ষ্টের মধ্যে আছি। একটু সাহায্য পাওয়ার আশায় সড়কে বসে আছি।
বৃ'দ্ধার এমন আর্তনাদ শুনে ইউএনও তাকে গাড়িতে তুলে শহরে নিয়ে যান। পরে নানারকম খাদ্যসামগ্রী কিনে তার হাতে তুলে দেন। খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল দশ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, এক কেজি পেঁয়াজ, দুই কেজি আলু, এক লিটার তেল, এক কেজি লবণ ও একটি সাবান। পরে বাড়ি যাওয়ার জন্য রিকশায় তুলে দেন।
বৃ'দ্ধা সম'লা বেগম বলেন, স্বামী মা'রা যাওয়ার পরে মানুষের বাড়িতে আর ধানের মিলে কাজ করে সন্তানদের খুব ক'ষ্টে বড় করেছি। কিন্তু এখন ওদেরও অভাব। তাই তারা আমাকে আলাদা করে দিয়েছে। এখন বয়সের ভারে আর কাজ করতে পারি না।
তিনি আরো বলেন, কয়দিন ধরে ঘরে খাবার নাই। কী খাব। তাই সাহায্য পাওয়ার আশায় সড়কে বসে ছিলাম। ইউএনও স্যার দেখে আমা'রে খাবার দিছেন। দোয়া করি আল্লাহ তার ভালো করুক।
ইউএনও ফারুক আল মাসুদ বলেন, মানুষ হিসেবে একজন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, সহযোগিতা করেছি। এটা আমা'র দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমি দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি খাদ্য সঙ্কটে থাকেন তাহলে ‘৩৩৩’ নম্বরে ফোন করলে তার বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেয়া হবে।